আর্কাইভ | ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২ ০৪:২৮:৩৮ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজঃ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক আজ শুধু নির্বাচন নয়, আরও অনেক বিষয়ে কথা বলবে বিএনপি * লালপুরে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন * শেখ হাসিনা, রেহানা, টিউলিপ, রাদওয়ানসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা * আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে সবার অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক * ডলার ইনডেক্সের মান তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন * পহেলা বৈশাখে বন্ধ থাকবে ঢাকার যেসব সড়ক * টাস্কফোর্সের সভা আজ শেখ পরিবারসহ ১১ শিল্পগোষ্ঠীর বিদেশে বিপুল সম্পদের খোঁজ * যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে নতুনধারার গণস্বাক্ষর ও উঠান বৈঠক * ভারত থেকে এলো ৩৬ হাজার টন চাল * পহেলা বৈশাখে কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টির শঙ্কা * তথ্য উপদেষ্টার সাথে তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রীর সাক্ষাৎ * ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন’ স্লোগানে প্রকম্পিত ঢাকা * আজ ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে “মার্চ ফর গাজা” * স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আধা মণ দুধ দিয়ে গোসল স্বামীর * পহেলা বৈশাখে চার ঘণ্টা বন্ধ থাকবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেট্রো স্টেশন * ফিলিস্তিনকে ফ্রান্সের স্বীকৃতি দেয়ার পরিকল্পনাকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বলল হামাস * এক্স অ্যাকাউন্ট ব্যবহারের নতুন নিয়ম, যা মানতে হবে ব্যবহারকারীদের * গাজায় ঢুকছে না ত্রাণবাহী গাড়ি, অনাহারে-মৃত্যু * মায়ের সঙ্গে নানা বাড়ি বেড়াতে এসে পানিতে ডুবে প্রাণ গেল দুই বোনের * বাজারে সক্রিয় সিন্ডিকেট কৌশলে আবারো বাড়ানো হচ্ছে নিত্যপণ্যের দাম
Photo
স্টাফ রিপোর্টার
ঢাকা, প্রকাশিতঃ
২১ মে ২০২৫
১০:১৯:৫০ পূর্বাহ্ন
                       

আ.লীগ আমলে ব্যাংক থেকে লুট করা হয়েছে পৌনে ২ লাখ কোটি টাকা 


আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত ১৫ বছরে প্রায় পৌনে ২ লাখ কোটি টাকার মূলধন খেয়ে ফেলেছে লুটেরারা। ২০ ব্যাংক থেকে এই টাকা লুট হয়। ব্যাংক দখল ছাড়াও এরা ঋণের নামে হাতিয়ে নিয়েছে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতি নেওয়ার প্রমাণ উঠে এসেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন।

(জুলাই-সেপ্টেম্বর) ছিল ৫৩ হাজার ২৫৩ কোটি টাকা। সে হিসাবে মাত্র ৩ মাসের ব্যবধানে ব্যাংকগুলোতে মূলধন ঘাটতি বেড়েছে এক লাখ ১৮ হাজার ৫৩৪ কোটি টাকা। তবে কিছু ব্যাংকে উদ্বৃত্ত থাকায় সামগ্রিকভাবে ব্যাংক খাতে মূলধন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১৭ হাজার ৬৪৭ কোটি টাকায়। যা ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে ১০ ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ছিল ৩৯ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডিসেম্বর শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ৫২ হাজার ৮৯১ কোটি টাকা। এছাড়া বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ঘাটতি ১৮ হাজার ১৯৯ কোটি, ইউনিয়ন ব্যাংকের ঘাটতি ১৫ হাজার ৬৯০ কোটি, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ঘাটতি ১৩ হাজার ৯৯১ কোটি, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের ঘাটতি ১২ হাজার ৮৮৫ কোটি, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ঘাটতি ১১ হাজার ৭০৯ কোটি, আইএফআইসি ব্যাংকের ঘাটতি ৯ হাজার ২৯ কোটি, ন্যাশনাল ব্যাংকের ঘাটতি ৭ হাজার ৭৯৯ কোটি, রূপালী ব্যাংকের ঘাটতি ৫ হাজার ১৯২ কোটি, পদ্মা ব্যাংকের ঘাটতি ৪ হাজার ৯৮৫ কোটি, অগ্রণী ব্যাংকের ঘাটতি ৪ হাজার ৬৮৬ কোটি, বেসিক ব্যাংকের ঘাটতি ৩ হাজার ১৫৬ কোটি, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ঘাটতি ২ হাজার ৯০৫ কোটি, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ঘাটতি ২ হাজার ৪৭০ কোটি, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের ঘাটতি এক হাজার ৯১০ কোটি, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ঘাটতি এক হাজার ৮৬২ কোটি, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ঘাটতি এক হাজার ৬৫৬ কোটি, এবি ব্যাংকের ঘাটতি ৫১৮ কোটি, আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের ঘাটতি ২৫৪ কোটি এবং বিদেশি হাবিব ব্যাংকের ১২ কোটি টাকার মূলধন ঘাটতি রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডিসেম্বরে ব্যাংক খাতের সম্মিলিত মূলধন ও ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের অনুপাত বা সিআরএআর কমে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশে, যা সেপ্টেম্বরে ছিল ৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ব্যাসেল-৩ নীতিমালা অনুযায়ী, প্রতিটি ব্যাংককে ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের ১০ শতাংশ বা ৫০০ কোটি টাকা (এর মধ্যে যেটি বেশি) মূলধন সংরক্ষণ করতে হয়। কোনো ব্যাংক এ শর্ত পূরণে ব্যর্থ হলে তা মূলধন ঘাটতি হিসাবে গণ্য হয়। মূলধনের এ অর্থ ব্যাংক উদ্যোক্তাদের প্রাথমিক বিনিয়োগ এবং ব্যাংকের মুনাফা থেকে সংরক্ষিত হয়। যেসব ব্যাংকের মূলধনে ঘাটতি থাকে, তারা শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দিতে পারে না। এছাড়া বিদেশি ব্যাংকগুলো প্রায়ই স্থানীয় ব্যাংকের মূলধন পরিস্থিতি যাচাই করে তারপর ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্থাপন করে।


অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আমিন যুগান্তরকে বলেন, উচ্চ খেলাপি ঋণের কারণে প্রভিশন ঘাটতি বেড়েছে। ফলে অনেক ব্যাংক তাদের মুনাফা থেকে প্রয়োজনীয় প্রভিশন সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়েছে, যা তাদের মূলধন ঘাটতিকে আরও তীব্র করেছে। বর্তমানে যেসব ব্যাংকের নতুন করে মূলধন ঘাটতি দেখা যাচ্ছে, তারা দীর্ঘদিন ধরে এ লোকসান বহন করছিল। তবে আগের সরকার দ্বারা তারা সুবিধাপ্রাপ্ত হওয়ায় এসব তথ্য গোপন ছিল। এখন সেগুলো প্রকাশ পাচ্ছে। তিনি বলেন, মূলধন ঘাটতি হলে ব্যাংকের ঋণ বিতরণের সক্ষমতা হ্রাস পায়, যা তার আর্থিক ভিত্তি দুর্বল করে। এসব ব্যাংক প্রভিশন বজায় রাখতে ব্যর্থ হলে লভ্যাংশ দিতে পারবে না এবং ধীরে ধীরে গ্রাহকও হারাবে। মূলধন ঘাটতির কারণে এসব ব্যাংকের সুনাম ক্ষুণ্ন হবে, ক্রেডিট রেটিংয়ে পতন হবে। বিদেশি ব্যাংকগুলোও তাদের সঙ্গে লেনদেনে সতর্কতা অবলম্বন করবে। এতে কিছু ক্ষেত্রে এলসি খোলার সময় মার্জিনও বেড়ে যেতে পারে। তবে সব পক্ষকে ধৈর্যধারণ করতে হবে। ঋণ আদায় জোরদার করতে হবে। নতুন নতুন ব্যবসায় মনোযোগ দিতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের অপর এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে দেশের ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। যা ২০২৩ সালের একই সময়ে ছিল এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে এক লাখ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ বেড়েছে। একই সময়ে ঋণ অবলোপন স্থিতি ৮১ হাজার ৫৭৮ কোটি টাকা। যা ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিল ৭১ হাজার ৮১৭ কোটি টাকা। ফলে এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ অবলোপন বেড়েছে ৯ হাজার ৭৬১ কোটি টাকা। এছাড়া ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তিন লাখ ৪৫ হাজার ১২২ কোটি টাকা পুনঃতফশিল করেছে ব্যাংকগুলো। এসব কারণে বড় অঙ্কের মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে ব্যাংকগুলো।

জানতে চাইলে অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ  বলেন, দেশের আর্থিক খাতে গত ১৫ বছরে পতিত সরকার যে অরাজকতা সৃষ্টি করেছিল, তা অকল্পনীয়। এরই প্রভাবে প্রায় ৫০ শতাংশ ব্যাংকের অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে। বর্তমানে ব্যাংকের সংখ্যা ৬১টি। এর মধ্যে প্রায় ৩০টি ব্যাংক ভালো নেই। লুটপাটের কারণে কয়েকটি ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা এতটাই খারাপ যে ব্যাংকগুলো কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পর্যন্ত নিয়মিত দিতে পারছে না। অনেক ব্যাংক, নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে পারছে না।

সংবাদটি পঠিতঃ ১৭০ বার


নির্বাহী সম্পাদকঃ আয়শা ছিদ্দিকা মনি

প্রকাশকঃ- মোঃ সাইদুল ইসলাম রেজা

মিরপুর ১০ ,ঢাকা-১২১৬, ইমেইলঃ news.muktobani@gmail.com টেকনিকালঃ 01511 100004, নিউজ রুমঃ 01552 601805

Design & Developed By IFTI IT