ব্রেকিং নিউজঃ |
নব আলো : ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ২৫ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হওয়া বনানীর সেই বহুতল এফআর ভবনটি রাজউকের অনুমোদিত নকশা লঙ্ঘন করে তৈরি করা হয়েছে। ভবনটির অনুমোদিত নকশা ছিল ১৮ তলার । তা না মেনে করা হয় ২৩ তলা!
বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউর এফআর টাওয়ারে আগুন লাগার পরই এই ভবনের কাগজপত্র যাচাই করে দেখেন রাজউক কর্তৃপক্ষ।
সংস্থার চেয়ারম্যান আবদুর রহমান বলেন, ‘আজকে আগুন লাগার পর আমরা যখন তথ্য ঘাঁটতে গেছি, তখন আমরা এটা পেয়েছি।’
রাজধানীর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) বলছে, এরকম কত ভবনে রাজউকের অনুমোদিত নকশা মানা হয়নি, সেটি জানার জন্য তারা একটি জরিপ করার উদ্যোগ নিয়েছেন।
বিবিসি বাংলার শাকিল আনোয়ারকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ‘যে ভবনটিতে আগুন লাগে, সেটির ফাইল আমি যতটুকু দেখেছি, ১৯৯৬ সালের ১২ই ডিসেম্বর এটিকে একটি ১৮ তলা ভবন হিসেবে করার জন্য নকশা অনুমোদন করা হয়। কিন্তু এই ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে ২৩ তলা। শুধু তাই নয়, রাউজকের অনুমোদিত নকশা থেকে এই ভবনের নকশায় আরও অনেক বিচ্যূতি রয়েছে।’
রাজউকের চেয়ারম্যান আরও জানাচ্ছেন, এফআর টাওয়ারের মালিকপক্ষ ২০০৫ সালের ২৩শে ফেব্রুয়ারী রাজউকের কাছে আরেকটি নকশা পেশ করে, যার সঙ্গে রাজউকে সংরক্ষিত নকশার কোন মিল নেই।
‘ফলে আমরা বুঝতে পারি, ঐ যে নকশা, ২০০৫ সালে যেটা তারা সাবমিট করেছিল সেটা বৈধ নকশা ছিল না।’
‘শুধু তাই নয়, ১৯৯৬ সালের যে মূল নকশা রাজউকের অনুমোদন পেয়েছিল, সেটির সঙ্গেও নির্মিত ভবনটির অনেক বিচ্যূতি রয়েছে’।
এ ব্যাপারে ২০০৭ সালে রাজউক একটি রিপোর্টও তৈরি করে।
এই ভবন নির্মাণের সঙ্গে যারা জড়িত ছিল, তাদের সবারই শাস্তি হওয়া উচিৎ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ভবনটি এ কারণেই অনিরাপদ ছিল কীনা এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, "আমাদের নকশা থেকে বিচ্যূতির কারণে ভবনটি অবশ্যই অনিরাপদ হতে পারে। কারণ আমাদের নকশায় অগ্নিনিরাপত্তা থেকে শুরু করে সব নিরাপত্তার বিষয়টি দেখা হয়।"
ঢাকা শহরে বিগত দশকগুলোতে যে শত শত বহুতল বাণিজ্যিক ভবন নির্মিত হয়েছে, সেগুলোর কত শতাংশ এরকম ঝুঁকির মধ্যে আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এরকম তো আরও থাকতে পারে। হয়তো থাকতে পারে। আমরা জানি না।’
তিনি বলেন, ‘এখন যেসব হাইরাইজ ভবন হচ্ছে সেগুলো যেন নিয়ম মেনে হয়, সে বিষয়ে আমরা সচেতন আছি। কিন্তু আগের কিছু ভবন হয়ে গেছে, যেগুলোর বেলায় একশোভাগ নিয়ম মানা হয়নি। এই ভবনগুলো নিয়ে আমরা বিপদে পড়েছি।
কেন এসব ভবনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এতগুলো এতবড় ভবন, আমরা ভেঙ্গেও দিতে পারছি না, আবার সংশোধনেরও উদ্যোগ নেয়া যাচ্ছে না। কারণ সংশোধন করতে গেলে পুরো ভবনটি ভেঙ্গে দিতে হবে। যেসব ক্ষেত্রে মূল নকশার ব্যতিক্রম করা হয়েছে, সেগুলো আমরা সংশোধনের চেষ্টা করেছি। কিন্তু এর বাইরেও অনেকগুলো আমাদের নজরের বাইরে থেকে যাচ্ছে।’